১০ হাজার টাকার মধ্যে স্মার্টফোন: অপনার পছন্দের ফোনটি বেছেনিন

 


আমাদের দেশে ১০,০০০ টাকার মধ্যে অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি সহ স্মার্টফোন খুঁজে পাওয়া এখন একটু চ্যালেঞ্জিং—তবু অসম্ভব নয়। এই গাইডে আমরা এমন সব মডেল বেছে নিয়েছি যেগুলো বাংলাদেশে সহজলভ্য, বাজেটের মধ্যে পড়ে এবং একদম বিগিনার‑ফ্রেন্ডলি। আপনি যদি প্রথম স্মার্টফোন কিনতে চান, বাচ্চাদের অনলাইন ক্লাসের জন্য ফোন দরকার হয়, বা সেকেন্ডারি ফোন নিতে চান—এই লেখাটি আপনার জন্য।


কিভাবে আমরা বাছাই করেছি

  • বাজেট সীমা: ১০,০০০ টাকা (কিছু ক্ষেত্রে ৯–১০ হাজার রেঞ্জে নেয়া হয়েছে)।
  • বাংলাদেশে প্রাপ্যতা: অফিসিয়াল/অথরাইজড চ্যানেলে মডেলটি বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
  • বিগিনার‑ফ্রেন্ডলি ফিচার: বড় স্ক্রিন, ভালো ব্যাটারি, প্রয়োজনীয় সেন্সর/ফিঙ্গারপ্রিন্ট (যেখানে আছে)।
  • ট্রাস্টেড কনফিগ: কমপক্ষে ৩GB RAM বা ৬৪GB স্টোরেজ থাকা ভ্যারিয়েন্টকে অগ্রাধিকার।

নোট: বাজারদর ভিন্ন দোকান/শহরে সামান্য কম‑বেশি হতে পারে এবং সময়ের সাথে পরিবর্তনও হতে পারে। এজন্য নিচে প্রতিটি ফোনের শক্তি‑দুর্বলতা স্পষ্ট করে দিয়েছি যাতে আপনি দোকানে গিয়ে সহজে তুলনা করতে পারেন।


১০,০০০ টাকার মধ্যে প্রস্তাবিত স্মার্টফোনসমূহ

১) Redmi A2+ (3/64GB)

ডিসপ্লে6.52" HD+ (বড় ও পরিষ্কার স্ক্রিন)
RAM/স্টোরেজ3GB/64GB (বেসিক ব্যবহারকারীর জন্য যথেষ্ট)
ব্যাটারি5000 mAh, 10W চার্জিং
ক্যামেরা8MP রিয়ার, 5MP ফ্রন্ট (ডে‑লাইটে মানসম্মত)
ফিচাররিয়ার ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, Helio G36 চিপ, স্টক‑টাইপ অ্যান্ড্রয়েড

কেন নেবেন: ব্র্যান্ড ট্রাস্ট, পরিষ্কার সফটওয়্যার, বড় ব্যাটারি। দৈনন্দিন টাস্ক, ইউটিউব, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ—সবই স্মুথ।

যাদের জন্য: প্রথম স্মার্টফোন, সিনিয়র ইউজার, সেকেন্ডারি ফোন।

দুর্বল দিক: ক্যামেরা ও গেমিং‑পারফরম্যান্স বেসিক লেভেলের; ফাস্ট‑চার্জিং নেই।

২) realme C30s (3/64GB)

ডিসপ্লে6.5" HD+
RAM/স্টোরেজ3GB/64GB
ব্যাটারি5000 mAh
ক্যামেরা8MP রিয়ার, 5MP ফ্রন্ট
ফিচারসাইড‑মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট, হালকা রিয়েলমি UI (Go)

কেন নেবেন: সাইড‑ফিঙ্গারপ্রিন্ট এই বাজেটে বাড়তি প্লাস; ডিজাইন‑বিল্ডও ভালো।

যাদের জন্য: স্টাইল ও বেসিক পারফরম্যান্স—দুটোই চান এমন ইউজার।

দুর্বল দিক: ক্যামেরা ও প্রসেসর বেসিক; ভারী গেমিং উপযোগী নয়।

৩) Infinix Smart 9 / Smart 9 HD (3/64GB)

ডিসপ্লে6.6"–6.7" HD+, কিছু ভ্যারিয়েন্টে 90Hz ফিল‑এর মতো স্মুথনেস
RAM/স্টোরেজ3GB/64GB (কিছু ভ্যারিয়েন্টে 4/128ও থাকে, তবে বাজেট ছাড়িয়ে যায়)
ব্যাটারি5000 mAh
ক্যামেরাডুয়াল/ট্রিপল সেট‑আপ (ডে‑লাইটে ভালো)
ফিচারXOS, বড় ডিসপ্লে—ভিডিও দেখার জন্য আরামদায়ক

কেন নেবেন: বড় স্ক্রিন, ব্যাটারি ব্যাক‑আপ এবং দামের বিপরীতে ভালো ভ্যালু।

যাদের জন্য: ভিডিও/সোশ্যাল মিডিয়া/হালকা গেমিং।

দুর্বল দিক: লো‑লাইট ফটো সেভাবে ভালো নয়; চার্জিং স্পিড বেসিক।

৪) Infinix Smart 7 (4/64GB বা 3/64GB)

ডিসপ্লে6.6" HD+
RAM/স্টোরেজ3GB/64GB বা 4GB/64GB
ব্যাটারি5000 mAh
ক্যামেরাডুয়াল রিয়ার, 8MP ফ্রন্ট (বেসিক)
ফিচারএন্ট্রি‑লেভেল পারফরম্যান্স, বড় ব্যাটারি

কেন নেবেন: ৫০০০ mAh ব্যাটারি + বড় ডিসপ্লে = ডে‑টু‑ডে টাস্কে নিশ্চিন্ত।

যাদের জন্য: অনলাইন ক্লাস, সিনেমা/ড্রামা দেখা, সোশ্যাল মিডিয়া।

দুর্বল দিক: ভারী গেমিং ও নাইট ফটোগ্রাফির জন্য উপযুক্ত নয়।

৫) itel A60s (4/128GB বা 4/64GB)

ডিসপ্লে6.6" HD+
RAM/স্টোরেজ4GB/64GB বা 4GB/128GB (এই দামে 128GB স্টোরেজ বড় সুবিধা)
ব্যাটারি5000 mAh
ক্যামেরাডুয়াল রিয়ার, 5–8MP ফ্রন্ট (ভ্যারিয়েন্টভেদে)
ফিচারবড় স্টোরেজ + বেসিক দৈনন্দিন কাজের জন্য স্থিতিশীল

কেন নেবেন: একই বাজেটে বেশি স্টোরেজ—অ্যাপ/ফটো রাখার ঝামেলা কমে।

যাদের জন্য: ফেসবুক/ইউটিউব‑কেন্দ্রীক ইউজার, স্টোরেজ‑হেভি ব্যবহারকারী।

দুর্বল দিক: ক্যামেরা ও প্রসেসর একদম এন্ট্রি‑লেভেল; হাই‑এন্ড গেমিং উপযুক্ত নয়।

৬) itel A05s (4/64GB)

ডিসপ্লে6.6" HD+
RAM/স্টোরেজ4GB/64GB
ব্যাটারি4000–5000 mAh (ভ্যারিয়েন্টভেদে), বেসিক চার্জিং
ক্যামেরাসিম্পল সেট‑আপ; অনলাইন ক্লাস/ভিডিও কলের জন্য ঠিকঠাক
ফিচারপ্রাইস‑টু‑ভ্যালু ভালো; বাচ্চাদের/সেকেন্ডারি ফোন হিসেবে উপযোগী

কেন নেবেন: খুব কম বাজেটে ৪GB RAM + ৬৪GB—ভ্যালু ফর মানি

যাদের জন্য: স্টাডি‑ফোকাসড ইউজার/অফিস ব্যাকআপ ফোন।

দুর্বল দিক: ক্যামেরা/গেমিং‑পারফরম্যান্স সীমিত।

৭) Symphony Z72 (4/64GB)

ডিসপ্লে6.6" HD+
RAM/স্টোরেজ4GB/64GB
ব্যাটারি5000 mAh
ক্যামেরাত্রিমুখী/ডুয়াল সেট‑আপ (ডে‑লাইটে ভালো)
ফিচারলোকাল ব্র্যান্ড সাপোর্ট; দৈনন্দিন ব্যবহারে স্থিতিশীল অভিজ্ঞতা

কেন নেবেন: ব্র্যান্ড‑সার্ভিস সহজলভ্য; বাজেটের মধ্যে সুষম প্যাকেজ।

যাদের জন্য: প্রথম স্মার্টফোন/পারিবারিক ব্যবহার।

দুর্বল দিক: হাই‑এন্ড গেমিং/লো‑লাইট ক্যামেরা প্রত্যাশা করবেন না।

৮) Symphony ATOM 5 (3/64GB)

ডিসপ্লে6.6" HD+
RAM/স্টোরেজ3GB/64GB
ব্যাটারি5000 mAh
ক্যামেরাবেসিক ডুয়াল/ট্রিপল সেট‑আপ
ফিচারঅফিস‑কমিউনিকেশন/অনলাইন ক্লাসে যথেষ্ট

কেন নেবেন: কম দামে বড় ব্যাটারি + ৬৪GB স্টোরেজ।

যাদের জন্য: সেকেন্ডারি ফোন, শিক্ষার্থী।

দুর্বল দিক: ক্যামেরা/পারফরম্যান্স বেসিক।

৯) Walton Orbit Y13 (4/64GB)

ডিসপ্লে6.5–6.6" HD+
RAM/স্টোরেজ4GB/64GB
ব্যাটারি5000 mAh
ক্যামেরাবেসিক সেট‑আপ, দৈনন্দিন সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য যথেষ্ট
ফিচারলোকাল ব্র্যান্ড সাপোর্ট, সার্ভিস নেটওয়ার্ক

কেন নেবেন: বাজেট‑রেঞ্জে ব্যালেন্সড কনফিগ; লোকাল সার্ভিস সেন্টারের সুবিধা।

যাদের জন্য: পরিবারের সিনিয়র/জুনিয়র—সবাইয়ের বেসিক চাহিদা মেটাতে পারবে।

দুর্বল দিক: ক্যামেরা/পারফরম্যান্স সীমিত, কিন্তু দাম অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য।

১০) Nokia C2 (2nd Edition) (2/32GB বা 2/64GB)

ডিসপ্লে5.7–6.0" এর আশেপাশে (কম্প্যাক্ট)
RAM/স্টোরেজ2GB/32–64GB (এন্ট্রি‑লেভেল)
ব্যাটারি2800–3000 mAh (কম্প্যাক্ট ডিভাইস বলে ছোট)
ক্যামেরাবেসিক—ভিডিও কল/ডকুমেন্ট স্ক্যানের জন্য উপযোগী
ফিচারসিম্পল সফটওয়্যার, সহজ ব্যবহারযোগ্যতা; সিনিয়র ইউজারদের জন্য আরামদায়ক

কেন নেবেন: খুব সিম্পল/ছোট ফর্ম‑ফ্যাক্টর দরকার হলে, বা একদম বেসিক কাজের জন্য।

যাদের জন্য: শুধু কল, ভিডিও কল, হালকা সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন ক্লাস।

দুর্বল দিক: কম ব্যাটারি, কম র‍্যাম—কঠোর বাজেট না হলে উপরের বিকল্পগুলো ভালো।


দ্রুত তুলনা (শক্তি‑দুর্বলতা নজরে রাখুন)

মডেল যা ভালো যা সীমিত কাদের জন্য
Redmi A2+ (3/64) পরিষ্কার সফটওয়্যার, বড় ব্যাটারি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ক্যামেরা/চার্জিং বেসিক বিগিনার/সিনিয়র
realme C30s (3/64) সাইড‑ফিঙ্গারপ্রিন্ট, হালকা UI প্রসেসর/ক্যামেরা এন্ট্রি‑লেভেল স্টাইল + বেসিক ইউজ
Infinix Smart 9 / 9 HD (3/64) বড় ডিসপ্লে, ব্যাটারি ব্যাক‑আপ লো‑লাইট ফটো ঠিকঠাক ভিডিও/সোশ্যাল মিডিয়া
Infinix Smart 7 ৫০০০ mAh ব্যাটারি, বড় স্ক্রিন গেমিং/নাইট‑শট দুর্বল অনলাইন ক্লাস/বেসিক টাস্ক
itel A60s (4/128) স্টোরেজে বড় ভ্যালু ক্যামেরা/পারফ বেসিক স্টোরেজ‑হেভি ইউজার
itel A05s (4/64) খুব কম বাজেটে ভালো কনফিগ ক্যামেরা/ব্যাটারি ভ্যারিয়েন্টভেদে সীমিত স্টুডেন্ট/ব্যাকআপ ফোন
Symphony Z72 (4/64) লোকাল ব্র্যান্ড সাপোর্ট, সুষম কনফিগ হাই‑এন্ড কাজের জন্য নয় পারিবারিক ব্যবহার
Symphony ATOM 5 (3/64) কম দামে ৬৪GB স্টোরেজ পারফরম্যান্স/ক্যামেরা বেসিক সেকেন্ডারি/শিক্ষার্থী
Walton Orbit Y13 (4/64) লোকাল সার্ভিস, ব্যালেন্সড স্পেক ক্যামেরা/গেমিং সীমিত পরিবারের জন্য উপযোগী
Nokia C2 (2nd) সিম্পল অভিজ্ঞতা, ছোট ফর্ম‑ফ্যাক্টর কম ব্যাটারি/র‍্যাম সিনিয়র/মিনিমাল ইউজার

বিগিনারদের জন্য কেনার আগে চেকলিস্ট

  1. ওয়ারেন্টি দেখুন: বক্স‑ওয়ারেন্টি/অফিসিয়াল সিল—অবশ্যই যাচাই করুন।
  2. মেমরি‑কম্বো: কমপক্ষে 3GB RAM + 64GB স্টোরেজ নিন; 4/64 বা 4/128 হলে আরও ভালো।
  3. ব্যাটারি: 5000 mAh হলে সারাদিন নিশ্চিন্ত; চার্জার ইন‑বক্স আছে কিনা দেখুন।
  4. ডিসপ্লে: HD+ প্যানেল এই বাজেটে স্ট্যান্ডার্ড। স্ক্রিন উজ্জ্বলতা/ভিউয়িং‑এঙ্গেল দোকানে হাতে‑কলমে দেখে নিন।
  5. সেন্সর/ফিঙ্গারপ্রিন্ট: নিরাপত্তা ও সুবিধার জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর থাকলে ভালো।
  6. সফটওয়্যার: অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ও সিকিউরিটি‑আপডেট নীতি জেনে নিন; স্টক‑টাইপ UI শেখা সহজ।
  7. ক্যামেরা: ডে‑লাইট ফটো ও ভিডিও‑স্যাম্পল দোকানে করে দেখুন; নাইট‑মোডে প্রত্যাশা কম রাখুন।
  8. নেটওয়ার্ক/সিম: 4G VoLTE সাপোর্ট চেক করুন; কল‑কোয়ালিটি শুনে দেখুন।

কোন মডেল কাকে নেবেন?

  • সিনিয়র বা একদম বিগিনার: Redmi A2+, Nokia C2 (2nd) – সহজ UI, কম ঝামেলা।
  • স্টুডেন্ট/অনলাইন ক্লাস: Infinix Smart 9/9 HD, Infinix Smart 7 – বড় স্ক্রিন + ব্যাটারি।
  • স্টোরেজ‑প্রিয় ইউজার: itel A60s (4/128) – একই দামে বেশি জায়গা।
  • স্টাইল + বেসিক টাস্ক: realme C30s – সাইড‑ফিঙ্গারপ্রিন্ট, হালকা UI।
  • লোকাল সার্ভিস‑ফোকাস: Symphony Z72 / Walton Orbit Y13 – দেশীয় সাপোর্ট সহজ।

প্রায় জিজ্ঞেস করা প্রশ্ন (FAQ)

১০,০০০ টাকার মধ্যে ৪GB RAM পাওয়া যাবে?

হ্যাঁ—itel A60s (4/128 বা 4/64), Infinix Smart 7 (4/64 কিছু ভ্যারিয়েন্ট), Walton Orbit Y13 (4/64), Symphony Z72 (4/64)। তবে দোকানভেদে ভ্যারিয়েন্ট‑স্টক ভিন্ন হতে পারে।

এই বাজেটে গেমিং কেমন হবে?

এন্ট্রি‑লেভেল গেমিং (Subway Surfers, Free Fire Lite টিপের) চলবে; তবে PUBG/Call of Duty‑র মতো ভারী গেমে গ্রাফিক্স/ফ্রেমরেট কমিয়ে নিতে হবে। গেমিং‑ফোকাস চাইলে বাজেট একটু বাড়িয়ে নেয়াই ভালো।

ক্যামেরা পারফরম্যান্স কতটা আশা করা উচিত?

ডে‑লাইটে ঠিকঠাক সোশ্যাল‑মিডিয়া‑রেডি ছবি/ভিডিও পেয়ে যাবেন। লো‑লাইটে নয়েজ আসবে—নাইট‑মোড থাকলেও অলৌকিক কিছু আশা না করাই ভালো।

ফাস্ট চার্জিং পাব?

এই বাজেটে সাধারণত 10W‑টাই কমন। ফাস্ট‑চার্জিং চাইলে একটু বাজেট বাড়াতে হবে।

অফিসিয়াল বনাম আনঅফিসিয়াল—কোনটা নেব?

নতুনদের জন্য অফিসিয়াল নেওয়া নিরাপদ—ওয়ারেন্টি/সার্ভিস ঝামেলা কম। আনঅফিসিয়াল দামে কিছু কম হতে পারে কিন্তু ওয়ারেন্টি/আপডেট/নেটওয়ার্ক ইস্যুতে ঝুঁকি থাকে।


শেষ কথা

১০,০০০ টাকার মধ্যে ‘সব কাজের উপযোগী’ ফোন পাওয়া কঠিন, কিন্তু সঠিক অগ্রাধিকার ঠিক করলে দারুণ ভ্যালু পাওয়া যায়। যদি আপনি সিম্পল, স্থিতিশীল একটা ফোন চান—Redmi A2+realme C30s নিরাপদ বাছাই। বড় স্ক্রিন + ব্যাটারি‑সেন্ট্রিক ইউজের জন্য—Infinix Smart 9/9 HD বা Smart 7 ভালো। আর যদি স্টোরেজ আপনার প্রধান দরকার হয়, itel A60s এই বাজেটে চমৎকার ভ্যালু দেয়। লোকাল ব্র্যান্ড‑সাপোর্ট চাইলে Symphony Z72 বা Walton Orbit Y13 নিন।

সবশেষে, দোকানে গিয়ে ডিসপ্লে উজ্জ্বলতা, ক্যামেরা‑স্যাম্পল, কল‑কোয়ালিটি, আর ওয়ারেন্টি‑কার্ড নিজে দেখে নিলেই সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। আপনার বাজেট‑এ ফিট এমন ফোন বেছে নিতে এই গাইডটি যেন হাতের কাছে থাকে—সেভ/বুকমার্ক করে রাখুন!


কোন কোন জায়গায় নতুনরা সাধারণত ভুল করেন (এড়িয়ে চলুন)

  • র‍্যামের চেয়ে শুধু মেগাপিক্সেল দেখা: ৫০MP ক্যামেরা লেখা মানেই ভালো ছবি নয়—সেন্সর/প্রসেসিং গুরুত্বপূর্ণ। ৩–৪GB RAM + ৬৪GB/১২৮GB স্টোরেজকে অগ্রাধিকার দিন।
  • ভিউ‑ওনলি ডিসপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত: দোকানে ভিডিও/গেম চালিয়ে উজ্জ্বলতা আর টাচ‑রেসপন্স পরীক্ষা করুন।
  • ওয়ারেন্টি না দেখে কেনা: অফিসিয়াল স্টিকার/কাগজপত্র যাচাই না করলে পরে সার্ভিসে ঝামেলা হয়।
  • চার্জার/কেবল ইস্যু: বক্সে চার্জার না থাকলে আলাদা খরচ পড়তে পারে; দোকানে জিজ্ঞেস করুন।
  • অতিরিক্ত কভার/গ্লাস: সস্তা কভার‑গ্লাসে টাচ/উজ্জ্বলতা খারাপ লাগতে পারে—ভালো মানের নিন।

পারফরম্যান্স বাড়াতে ৭টি প্র্যাক্টিক্যাল টিপস

  1. প্রথম দিনেই অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ আনইনস্টল/ডিসেবল করুন।
  2. লাইটওয়েট অ্যাপ বেছে নিন: Facebook Lite, Messenger Lite, Opera Mini ইত্যাদি।
  3. ফটো/ভিডিও গুগল ফটোস‑এ ব্যাকআপ রেখে ফোনের স্টোরেজ ফাঁকা রাখুন।
  4. হোমস্ক্রিনে লাইভ ওয়ালপেপার/ভারী উইজেট কম ব্যবহার করুন।
  5. গেম খেললে গ্রাফিক্স সেটিং Low/Medium রাখুন; ব্যাটারি‑সেভার অফ রাখুন।
  6. ৬ মাস পরপর ক্যাশ‑ডাটা ক্লিয়ার করুন; অত্যধিক হলে ফ্যাক্টরি রিসেট (ব্যাকআপ করে) বিবেচনা করুন।
  7. সফটওয়্যার আপডেট সময়মতো ইনস্টল করুন—সিকিউরিটি/বাগ‑ফিক্সের জন্য জরুরি।

বাজেট যদি ১০–১২ হাজারে যায়, তখন কোন আপগ্রেড যুক্তিযুক্ত?

  • র‍্যাম/স্টোরেজ: 4/128GB মেইনস্ট্রিম হয়ে যায়—মাল্টিটাস্কিং বেশি স্মুথ।
  • চার্জিং: ১৫–১৮W ফাস্ট‑চার্জিং দেখা যায়—দ্রুত চার্জ হবে।
  • ডিসপ্লে রিফ্রেশ রেট: 90Hz প্যানেল—স্ক্রল আরও স্মুথ লাগে।
  • ক্যামেরা: নাইট‑মোড/পোর্ট্রেট উন্নত হয়—সোশ্যাল মিডিয়ায় পার্থক্য বোঝা যায়।

দোকানে গিয়ে হাতে‑কলমে পরীক্ষা (স্টেপ‑বাই‑স্টেপ)

  1. স্ক্রিনে ইউটিউব 1080p ভিডিও চালিয়ে উজ্জ্বলতা/কালার/ভিউয়িং‑এঙ্গেল দেখুন।
  2. ৫ মিনিট মোবাইল ডাটা/ওয়াই‑ফাই চালিয়ে ওয়েব ব্রাউজিং + স্ক্রল করুন—ল্যাগ চেক করুন।
  3. ক্যামেরায় ইনডোর/আউটডোরে ২–৩টি ছবি তুলুন; শার্পনেস/ফোকাস/নাইট দেখে সিদ্ধান্ত নিন।
  4. টেস্ট কল দিয়ে ইয়ারপিস সাউন্ড/মাইক শুনে দেখুন।
  5. ফিঙ্গারপ্রিন্ট/ফেস আনলক রেজিস্টার করে স্পিড চেক করুন।
  6. সেন্সর/নেটওয়ার্ক (VoLTE, ডুয়াল‑সিম) সেটিংসে গিয়ে যাচাই করুন।
  7. বক্স খুলে অ্যাক্সেসরিজ (কেবল/চার্জার/কভার/পিন) মিলিয়ে নিন; ওয়ারেন্টি কার্ড/ইনভয়েস নথিভুক্ত করুন।

শব্দকোষ (দ্রুত বোঝা)

  • HD+: 720p‑ক্লাস স্ক্রিন; এই বাজেটে স্ট্যান্ডার্ড।
  • Refresh Rate: 60Hz/90Hz—স্ক্রলিং কতটা স্মুথ লাগবে।
  • mAh: ব্যাটারির ক্ষমতা; 5000 mAh = সারাদিনের ব্যাক‑আপ সাধারণত।
  • VoLTE: 4G‑তে ভয়েস কলের কোয়ালিটি উন্নত করে।
  • UI: ফোনের কাস্টম সফটওয়্যার (MIUI/XOS/Realme UI ইত্যাদি)।

এই এক্সট্রা সেকশনগুলোসহ গাইডটি আরও বিস্তারিত করা হয়েছে, যাতে নতুনরাও আত্মবিশ্বাস নিয়ে সঠিক ফোন বেছে নিতে পারেন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

জীবনে কোনোদিন ডাক্তার দেখাতে হবে না!

ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে গিয়ে যে সমস্যাগুলো হয় ও তার সমাধান!